
মোঃ আশরাফুল ইসলাম।
বাগেরহাট সদর উপজেলার সাদুল্লাপুর ৮ নং ওয়াড এক সেনা কর্মকর্তার পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলা, অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নারী জানিয়েছেন, তিনি সাহস করে থানায় মামলা দায়ের করলেও প্রভাবশালী আসামিরা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। বরং মামলা করার পর তাঁকে অপহরণ করে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাগেরহাট মডেল থানায় বাংলাদেশ ফরম নং ৫৩৫৬, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ধারা ১৫৪ অনুযায়ী থানা মামলা নং ২০, তারিখ ২০ অক্টোবর ২০২৫, বাৎসরিক নং ২০০ হিসাবে এ মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলায় বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ধারা ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩৭৯/৩৫৪/৫০৬(২)/১১৪ অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন — (১) মাজেদ খান, (২) অজেদ খান, (৩) মহসিন গারা, (৪) মনিরুজ্জামান টিপু, (৫) ফারুক শেখ, (৬) শেখ মো. বকতিয়ার, (৭) ইকতিয়ার শেখ, (৮) রজিনা বেগম এবং আরও অজ্ঞাত ১০–১২ জন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, মামলার পর প্রভাবশালী আসামিরা “কোন দলের নাম ব্যবহার করে” নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা কোনো রাজনৈতিক দলের নয়; বরং নিজেদের স্বার্থে দলের নাম ভাঙিয়ে অপরাধ করছে। অভিযোগকারীর ভাষায় —
“আমাকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার কারণে অপহরণ করে ব্রেট দিয়ে শরীর কেটে দেয়া হয়েছে, মাথা ও শরীর জখম করা হয়েছে। এত কিছু হওয়ার পরও থানার পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও বলেন,
“যদি এত বড় ঘটনা ঘটার পরও বিচার না পাই, তবে বুঝবো সাধারণ মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই। আজ যদি অপরাধীরা ধরা না পড়ে, তাহলে তারা আরও হিংস্র হয়ে উঠবে।”
এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, সেনা কর্মকর্তার পরিবারের উপর এ ধরনের বর্বর হামলা গোটা সমাজের জন্য লজ্জাজনক। প্রশাসন দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় না আনলে আইনশৃঙ্খলার প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হবে।
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতেও দেখা গেছে, হামলাকারীরা দলবদ্ধভাবে ওই নারীর বাড়িতে প্রবেশ করে হামলা চালায়। এলাকাবাসীর ধারণা, এ ঘটনা পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী বাগেরহাট জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার (এসপি), এবং সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন —
“ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করুন, যেন আইনের প্রতি মানুষের শেষ বিশ্বাসটুকু টিকে থাকে।”
এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি (সংবাদ লেখা পর্যন্ত)।
সাংবাদিক সমাজ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে, “যে বা যারা অর্থের বিনিময়ে মামলা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”